September 5, 2020 By Easin 0

কক্সবাজারের শুটকি ও তার ইতি বৃত্তি

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের শুটকি এখন অভিভাজদের খাবার মেন্যুতে যুক্ত হচ্ছে। এ নগরির শুটকির সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আর্ন্তজাতিক মহলেও সুনাম অর্জন করছে।

কক্সবাজারের শুটকি

সম্পূর্ণ সামুদ্রিক মাছের এ শুটকি দেখতে যেমন আর্কষণীয়, খেতেও সুস্বাদু। কক্সবাজারে পর্যটকদের এসব শুটকি আকর্ষণ করে। ফলে অনেক পর্যটক কক্সবাজার এলে শুটকি কিনে নিয়ে যায়।

জেলেরা প্রতিদিন গভীর সাগর থেকে রূপচাঁন্দা, ছুরি, লাক্কা, কুরাল, সুরমা, শৈল, কাচকি, চিংড়ি, মলা, লইট্ট্যা, গইন্যা, বাইলা, ফাইস্যাসহ প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ ধরে। এসব মাছ আনার পর বিভিন্ন মাছ জেলেরা আলাদা করে ধুয়ে শুকাতে দেয়। সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি (ভাদ্র থেকে ফাল্গুন) ‍ শুটকি বেশি পরিমাণ উৎপাদিত হয়। শুটকি শুকানোর একমাত্র অবলম্বন তীব্র রোদ।

(শুটকি শুকানোর বেশি কাজ করে নারীরা। বাঁশ দিয়ে তৈরি শত শত মাচায় (চাতাল) কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে শুকাতে দেয়। তবে মাছ শুকাতে গিয়ে হাতে প্রচুর চোট পায় এসব নারীরা। )

অনেক সময় সামুদ্রিক এসব মাছ মন্ড আকারে হয়ে যায়। পরে নারীরা খালি হাত দিয়ে এসব মন্ড ছাড়াতে গিয়ে হাতে ব্যাপক চোট লাগে। অনেক সময় মাছের ছোট ছোট কাঁটা হাতে বিদে যায়। সুঁই দিয়ে চেষ্টা করেও অনেক সময় এসব কাঁটা তোলা সম্ভব হয় না। এতে হাতে জট পড়ে যায়।

খালি হাতে শুটকি শুকানোর কাজ করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয় নারীরা। জীবিকার তাগিদে তবু এ কাজ থেকে বিরত থাকে না তারা।

শুকানোর পর এসব শুটকি প্লাস্টিকের বস্তা ভরে বাজারজাত করা হয়। কক্সবাজারের নাজিরার টেক বালিয়াড়ী এলাকায় প্রায় একশত একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে শুধু দেশের নয় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শুটকি পল্লী।

এছাড়া কক্সবাজারের খুরুশকুল, সমিতিপাড়া, নুনিয়ারছঠা, চৌফলদন্ডি, মহেশখালীর সোনাদিয়া, গোরকঘাটা, তাজিয়াকাটা, কুতুবজোম এলাকায় শুটকি পল্লী রয়েছে। এসব এলাকায় উৎপাদিত শুটকি সৌদি আরব, হংকং সহ বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হয়।

ছুরি, কুরাল, সুরমা, শৈল, লইট্ট্যা, গইন্যা, ফাইস্যাসহ বেশ কয়েকটি মাছ লম্বা বলে শুকাতে সময় লাগে। এজন্য তাজা থাকাবস্থায় এসব মাছ কেটে দ্বিখণ্ডিত করে সারি করে ঝুলিয়ে শুকাতে দেওয়া হয়।