September 5, 2020 By Easin 0

কক্সবাজারে হচ্ছে বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন

কক্সবাজারের শুটকি

কক্সবাজার শহরের সমুদ্রতীরবর্তী নাজিরারটেক,ফদনারডেইল, নুনিয়াছড়া সহ জেলার মহেশখালী, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়াতে শুরু হয়েছে শুঁটকি উৎপাদন। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩০ মে পযন্ত চলবে। শুটকিতে কোন প্রকার লবণ, বিষ ও বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে শুটকি উৎপাদন করা হচ্ছে।

এছাড়াও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শুটকি উৎপাদন কম হবে বলে দাবি করছেন ব্যাবসায়ীরা। সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ এবং ঘুর্ণিঝড় বুলবুল’র কারনে ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো আশানুরুপ শুটকি উদপাদন হচ্ছে না।null

সাগরের পাশে বিশেষ উপায়ে তৈরি বাশেঁর মাচার উপর কাচা মাছ বিছিয়ে সূর্যের তাপে শুকিয়ে তৈরি হয় শুটকি। প্রায় ২০/২৫ প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরী করা হয় শুটকি। এরমধ্যে রূপচাঁন্দা, ছুরি, কোরাল, মাইট্যা, ফাইস্যা, লইট্ট্যা, পোপা, রুপচাদা, টেকচাঁদা অন্যতম। এ সব কাঁচা মাছ শুটকি হতে সময় লাগে ৪ হতে ৫ দিন। হাঙ্গর এবং লাক্ষ্যা বড় মাছের ক্ষেত্রে সময় লাগে ১৫দিন।

কক্সবাজার নাজিরারটেক শুটকি মহাল ছাড়াও জেলার উপকূলীয় এলাকা কুতুবদিয়া, মহেশখালী সোনাদিয়া, গোরকঘাটা, তাজিয়াকাটা, কুতুবজোম, কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ, খুদিয়ারটেক, আলি আকবর ডেইল, অংজাখালী, পশ্চিম ধুরুং, টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিন, জালিয়াপাড়া, সদর উপজেলার নাজিরারটেক, খুররুশকুল, সমিতিপাড়া, চৌফলদন্ডিসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বিপুল পরিমাণ শুটকি উৎপাদন হয়ে থাকে।

মহালের ব্যবসায়ীরা সিরাজ সওদাগর, মো: আলী হোসাইন এবং কামাল উদ্দিন জানান, দেশের বৃহত্তম শুটকি মহাল কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেকের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা কাজ করছে। তারা শুটকিতে কোন প্রকার লবণ, বিষ ও বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে শুটকি উৎপাদন করা হচ্ছে। এর ফলে আমরা হারানো সুনাম ফিরে পাব বলে আশা করছি।

ইতিমধ্যে প্রায় শুটকী মহালে বিষমুক্ত শুটকি উৎপাদন করছে। তারা আরো জানান, এখানে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে এবং প্রতি দিন ৩০০ থেকে ৪০০ মেট্রিক টন শুটকি উৎপাদন করছে। এছাড়াও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শুটকি উৎপাদন কম হবে বলে দাবি করছেন তারা। সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ এবং ঘুর্ণিঝড় বুলবুল’র কারনে ৩ মাস অতিবাহিত হলেও আশানুরুপ শুটকি উদপাদন হচ্ছে না।

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক শুটকি মহালের শ্রমিক রহিম, আলী হোসেন, সাজ্জাদ, বাহাদুর, রোকেয়া, রুবি জানান, শুটকি মৌসুমের প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হলেও আমরা বেশী কাজ করতে পারি নাই। ঘূর্ণিঝড় এবং মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিষমুক্ত শুটকি তৈরি করছি। যত আবহাওয়া ভাল থাকবে শুটকি উৎপাদন ভাল হবে। তাতে আমরা কাজ পাব। আমাদের উপকার হবে।https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?client=ca-pub-5392375984254932&output=html&h=300&adk=210973498&adf=4105137083&w=360&ebfa=1&lmt=1599226163&num_ads=1&rafmt=1&armr=3&sem=mc&pwprc=4967807868&psa=1&guci=2.2.0.0.2.2.0.0&ad_type=text_image&format=360×300&url=https%3A%2F%2Fwww.bangladeshtoday.net%2F%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587-%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%259A%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%259B%25E0%25A7%2587-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B7%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%2F&flash=0&fwr=1&pra=3&rh=289&rw=346&rpe=1&resp_fmts=3&sfro=1&wgl=1&fa=27&adsid=ChAI8O7M-gUQjtDY_YyuiPB4EkgA7m0QzPRN5gU8Cs7gIEoDiowcc_nwnpL72WjXE6nr9KZINnJQ4m2WX43Qn7UK5wsLrPNI-00ClWN_31ATSxl6wf4To-9AYVg&dt=1599293866829&bpp=23&bdt=2736&idt=-M&shv=r20200831&cbv=r20190131&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D60ed9c5b8264d815%3AT%3D1599293031%3AS%3DALNI_MZMZ2N5qs-R5xUEpXZTq5s0MAu_Ww&prev_fmts=0x0&nras=2&correlator=6043396982637&frm=20&pv=1&ga_vid=192805499.1599293029&ga_sid=1599293865&ga_hid=353739828&ga_fc=0&iag=0&icsg=584786848398&dssz=33&mdo=0&mso=0&u_tz=360&u_his=5&u_java=0&u_h=720&u_w=360&u_ah=720&u_aw=360&u_cd=24&u_nplug=0&u_nmime=0&adx=0&ady=2094&biw=360&bih=576&scr_x=0&scr_y=367&eid=21066124%2C21066468%2C21066973&oid=3&pvsid=3379550669411446&pem=837&ref=https%3A%2F%2Fwww.google.com%2F&rx=0&eae=0&fc=1408&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C360%2C0%2C360%2C576%2C360%2C576&vis=1&rsz=%7C%7Cs%7C&abl=NS&fu=8320&bc=31&jar=2020-09-05-08&ifi=6&uci=a!6&btvi=1&fsb=1&xpc=lCzLgjoou8&p=https%3A//www.bangladeshtoday.net&dtd=49

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ জানান, প্রায় ১০০ একর এলাকা জুড়ে গড়ে উঠা দেশের বৃহত্তম এ শুটকী মহালে ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক আড়ত রয়েছে। এখানে নারী সহ প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এখানে ৯৬০ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। চলতি মৌসুমে আমরা কোন ধরণের বিষ মেশানো থেকে বিরত থাকার শপথ নিয়েছি। বিষ মুক্ত শুটকি উৎপাদন করে প্রয়োজনে বেশী টাকায় শুটকি বিক্রি করবো। তারপরও বিষ প্রয়োগ করবো না’।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে জেলেদের নিয়ে কক্সবাজার জেলা মৎস্য অফিসে জেলেদের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এরপরও যদি কোন শুটকি মহাল আমাদের নির্দেশ অমান্য করে তাহলে আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জেল জরিমানা করবো।

তিনি আরো জানান, শুটকি মহালে এখনো সম্পূর্ন বিদ্যুতায়ন হয় নাই। যদি ১০ বৈদ্যুতিক খুঁটি দিয়ে তার টানা হয় তাহলে সম্পূর্ণ শুটকি মহাল বিদ্যুতায়ন হবে। এবং নাজিরারটেক রাস্তার কারনে আমরা সঠিক সময়ে মালামাল আনা নেওয়া করতে পারিনা। যার প্রধান কারণ রাস্তার উপর জোয়ারের পানি চলে আসে। ফলে ২/৩ঘন্টা দেরী হয়ে যায়। আমি সমস্ত ব্যবসারীর পক্ষ থেকে বিদ্যুত এবং রাস্তা সংস্কারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এটা ব্যবসায়ীর একমাত্র দাবী।

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ ট্রাক অর্থাৎ ৮০ থেকে ৯০ টন শুটকি মাছ ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভন্ন আড়তে যাচ্ছে।
কক্সবাজার শহরের বড় বাজারের কুয়াকাটা শুটকি আড়তের মালিক ছৈয়দ আলম বাদশা জানান, আড়ত থেকে ক্রয় করে স্থানীয় খুচরা বাজারে বিক্রি করা হয় প্রতি কেজি লইট্যা ৪৫০ থেকে ৫৫০টাকা, ফাইস্যা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছুরি ৬০০ থেকে ১২০০টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ছোট পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা ১৮০০ টাকা ২২০০ টাকা, লাক্ষা ২৮০০ থেকে ৩২০০ টাকা, মাইট্যা ১৩০০থেকে ১৪০০ টাকা, কালা চান্দা ১০০০ থেকে ১২০০টাকা,বাইম মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০টাকা,বাইলা ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা, বাশপতি(পেউয়া) ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তিনি আরো জানান, দাম বেশী বা কম তা শুটকি উতপাদনের উপর নির্ভর করবে।

এছাড়াও কক্সবাজারের শুটকি মহালের মাছের গুড়ি সারাদেশে পোল্ট্রি ফার্ম ও ফিস ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে। ঢাকার বড় বড় ফিস ফিডের ফার্মসহ দিনাজপুর, নরসিংদী, চট্টগ্রামেও চাহিদা মেটায়। প্রতি মৌসুমে নাজিরারটেক শুটকি মহাল থেকে লইট্টা, পাইশ্যা, পোয়া, ছুরি, মাইট্যা, কেচকি, রূপচাঁদসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিদেশে রপ্তানীসহ ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জান জানান, উৎপাদিত শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দেশের মানুষের প্রোটিনের একটি বড় অংশ কক্সবাজারের উৎপাদিত শুটকী থেকে পুরন হচ্ছে। বিষ মুক্ত শুটকি উৎপাদনে জেলা মৎস অধিদপ্তর বিভিন্ন সভা সেমিনার এবং শুটকি সংশ্লিষ্টদের ওয়ার্কশপ প্রদানে সহযোগিতা করেছে। কক্সবাজার শুটকি মহাল এলাকায় নারী সহ প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে।